অতীতের ডায়রী থেকে



আমার জীবনে মজার ঘটনা বলতে গেলে বেশ কয়েকটি আছে , তার মধ্যে একটি ঘটনার কথা তোমাদের সাথে আমি শেয়ার করছি।
এই ঘটনাটি ঘটেছে কলকাতাতে,পূজোর সময়,বেশ কয়েকবছর আগে। দুই ছেলেকে নিয়ে তখন আমি  ব্যাঙ্গালোরে ওদের পড়াশোনার জন্য থাকতে হতো। সে বছর কলকাতার পূজো দেখবো বলে ব্যাঙ্গালোর থেকে কলকাতায় এসেছিলাম। 
কলকাতার পূজো মানে বিশাল ব্যাপার।  চতুর্থী পঞ্চমী থেকেই শুরু হয়ে যায় পূজো দেখা আর এখন তো মহালয়া থেকেই শুরু হয়ে যায়।
 আমরাও পঞ্চমী থেকেই পূজো দেখা শুরু হয়ে গেছিলো। আমার ছোটবোন আবার কলকাতাতেই থাকে।  পূজোর যেকোনো একটাদিন আমরা সবাই মিলে পূজো দেখি। তবে এখন আর রাত জেগে অবশ্য দেখি না।

 সে বছর‌ও আমরা যথারীতি বেরিয়ে ছিলাম পূজো দেখতে গাড়ী নিয়ে।সারারাত জেগে পূজো দেখে আমরা সকলে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম । কখন যে ভোর ৫টা বেজে গেছে বলতেই পারিনি। একটা করে পূজো দেখছি সুন্দর সুন্দর ঠাকুরের ফোটো তুলছি। পূজো দেখা প্রায় শেষের পথে। একটা খুব ভালো পূজো বাকি ছিলো,পূজো প্যান্ডেলে  সবার চোখ ঘুমে ঢুলো ঢুলো,পূজো দেখার এ্যানার্জি সব চলে গেছে। 
এখন আসল মজার কথায় আসা যাক , এতো ভীড়ের  মধ্যেও সারারাত পূজো দেখে সকলে একসাথে ছিলাম । হারালাম না ।আর যেই ভোর হলো তখন হারিয়ে গেলাম ভাবো লজ্জার শেষ নেই। আমিও এতোটা ব্যস্ত  ফোটো তোলাতে যখন  পিছন ফিরে দেখলাম দেখি আমার মানুষ গুলো একটাও নেই । সে সময় ভয়ে আমার বুকের জল শুকিয়ে হাতপা ঠান্ডা হয়ে আসছিলো,পূজোর সময় রাস্তা ঘাট চেনা খুব মুস্কিল হয়ে যায় ।সব একরকম মনে হয়। ভয়ে এতোটা নার্ভাস হয়ে গেছিলাম যে আমার হাতে যে মোবাইলটা  আছে সেটাও ভুলে গেছিলাম।ওরা সবাই হাঁটতে হাঁটতে অনেকটা দূর চলে এসেছিলো গাড়ীর জন্য, পার্কিং তো সামনে থাকে না, তাই।  আমার  বরের উপর‌ও খুব রাগ হচ্ছিলো কি বলবো ,সে তো একটু লক্ষ করতে পারতো বলো ।আমাকে একটুও খেয়াল করেনি। আমি রাগ করে বরকে আর ফোন করিনি , ছোটবোনের জামাইকে যখন ফোন করলাম তখন সবাই অবাক, আমার কান্ড কারখানা দেখে। তারপর বোনের জামাই এসে আমাকে ওখান থেকে নিয়ে গেলো।ঐ ঘটনা মনে পড়লে এখন‌ও হাসি পায়।
কিছু সাথে থাকুক আর না থাকুক একটা মোবাইল সঙ্গে থাকা চাই ।😂😂

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সময় বা পরিস্থিতি মানুষকে অনেক কিছু শিখিয়ে দেয় ,,,,কিন্ত অনেক সময় সময়ের উপর সব ছেড়ে দেওয়া টাও বোকামি বলে মনে হয়,,

শ্রদ্ধাঞ্জলী

মূল্যবোধ